সারাদেশের সাথে বৃহস্পতিবার খুলে যাচ্ছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সব পর্যটন স্পট ও অবকাশ কেন্দ্র। খুলে দেয়া হচ্ছে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও ব্যক্তি মালিকানাধীন কটেজও। তবে পর্যটন খোলা রেখে অতিথিদের সেবা দিতে স্বাস্থ্যবিধি এবং সরকারের সবশেষ নির্দেশনা মেনে সেবা কার্যক্রম চালানোর শর্ত জুড়ে দিয়েছে বান্দরবানের জেলা প্রশাসন।
বিধি নিষেধ তুলে নেয়ার আগের দিন বুধবার ১৮ আগষ্ট বিকেলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, সার্ভিস প্রোভাইডার, স্বাস্থ্যবিভাগ এবং পুলিশ প্রশাসনের সাথে এক মতবিনিময় সভায় পর্যটন সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানানো হয়।
কালেক্টরেট সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এই মত বিনিময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, স্বাস্থ্যবিভাগের প্রতিনিধি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা সভায় নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় জানানো হয়, ৩ মাস আগে পর্যটনের উপর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উদাসীনতার কারণে সারাদেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এ অবস্থায় সরকারি উদারতার সুযোগে হোটেল- মোটেল, রিসোর্ট ও পর্যটন কেন্দ্র পরিচালনায় বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফুর রহমান জানান, জেলা সদরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ৮টি এবং বিভিন্ন উপজেলায় আরও ১০ টি সহ মোট ১৮টি ভ্রাম্যমান আদালত সার্বক্ষণিক নজরদারী করবে।
তিনি বলেন, পরিবারের সদস্য ছাড়া কোনো প্রাতিষ্ঠানিক গ্রুপ বা অপরিচিতজনদের নিয়ে গ্রুপ/প্যাকেজ ট্যুরিজমের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই ট্যুর অপারেটরদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
সভায় বান্দরবান জেলা হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি অমল দাশ আশ্বস্ত করেন যে, প্রতিটি হোটেল-মোটেল-রিসোর্টের প্রবেশ পথে হাত ধোঁয়া, হাত সেনিটাইজড করা এবং দেহের তাপমাত্রা পরিমাপ করার লক্ষ্যে সমিতির পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কোভিড নেগেটিভ সনদ ছাড়া কাউকে কক্ষ বরাদ্দ বা অন্য কোনো সার্ভিস দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনার আলোকে হোটেল-মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র সমূহে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক অতিথির অবস্থান নিশ্চিত করতে সমিতির সদস্যদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, লকডাউন আরোপের কারণে গত বছরের মার্চ মাস থেকে এ বছরের মে মাস পর্যন্ত ১৫ মাসে পর্যটন খাতে ১৪৮৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। একই কারণে পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৪০ লাখ লোক কর্ম হারিয়ে বেকার হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার জীবন ও জীবিকা সমন্বয় ঘটাতে পর্যটন খাতের উপর থেকে বিধি নিষেধ তুলে নিয়েছে।