বান্দরবানশনিবার, ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাহাড়ে তরমুজ চাষের সম্ভাবনা

প্রতিবেদক
স্টাফ রিপোর্টার
আগস্ট ২৬, ২০২১ ৮:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এতোদিন সমতল বা নদীর পাড় এলাকায় গ্রীষ্মকালে তরমুজ চাষ হয়ে আসলেও সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের ঢালেও তরমুজ চাষ সম্ভব। গবেষণা প্লটে উৎপাদিত তরমুজ ফল বেশ রসালো, সুস্বাদু এবং ভেতরের অংশ গাঢ় লাল। পাহাড়ে তরমুজ চাষের সম্ভাবনা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা চালিয়েছে বাংলাদেশ মৃত্তিকা সংরক্ষণ ইন্সটিটিউট (এসআরডিআই) বান্দরবান কেন্দ্র।

কেন্দ্রের ইনচার্জ কৃষিবিদ মাহাবুবুল ইসলাম জানিয়েছেন, মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ৩ মাস মেয়াদে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা চালিয়ে তারা পাহাড়ি এলাকায় বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। এতে বর্ষা মৌসুমেও পাহাড়ি এলাকায় তরমুজ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

শহরের অদূরে মেঘলা এলাকায় মৃত্তিকা সংরক্ষণ ও পানি বিভাজিকা কেন্দ্র (এসআরডিআই) প্রাঙ্গনে ৩টি প্রদর্শনী প্লটে এফআই হাইব্রিড বাংলালিংক জাতের তরমুজ চাষ করে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। এর একটি প্লট ছিল জেন্টল স্লোপ (মৃদু ঢাল), দ্বিতীয়টি মডারেট স্লোপ (মাঝারি ঢাল) এবং তৃতীয়টি ছিল স্টিপ স্লোপ (খাড়া ঢাল)।

মাহাবুবুল ইসলাম জানান, প্রতিটি প্লটে ৩০০ বর্গমিটার ভূমি নেয়া হয়। প্রাপ্ত ফলাফলে জেন্টল ও মডারেট স্লোপে প্রতি হেক্টরে উৎপাদন পাওয়া গেছে ৮ মেট্রিক টন। স্টিপ বা খাড়া ঢালে এই উৎপাদন ছিল প্রতি হেক্টরে ৬ মেট্রিক টন।

গবেষণা পত্র অনুযায়ী, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পলিব্যাগে চারা উত্তোলন করে ২১ দিন বয়সী তরমুজ চারা ৪ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়। চারা বড় হলে সেগুলোকে মাচাং এ তুলে দেয়া হয়। সেখানেই পাওয়া যায় ঢাউশ সাইজের সুস্বাদু তরমুজ।

কৃষিবিদ মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, সমতল এলাকায় গ্রীষ্মকালে তরমুজ চাষ করার কারণে প্রচুর সেচ দিতে হয়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে মাটি ভেজা থাকায় তরমুজ চাষ করতে সেচ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। উপরোন্তু তরমুজ চাষ করায় পাহাড়ের ঢালে আড়াআড়ি প্রতিবন্ধকতা (হেজরো) তৈরি হওয়ায় প্রবল বৃষ্টির সময় মাটি ক্ষয়রোধ করা সম্ভব হয়।

কৃষিবিদ মাহাবুবুল ইসলাম জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে পাহাড়ের ঢালে তরমুজ চাষ করে সাফল্যতা আসায় বান্দরবানসহ দেশের সকল পাহাড়ি এলাকায় অফ সিজনে তরমুজ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অফ সিজনে পতিত পাহাড়ি ভূমিতে বৃষ্টিনির্ভর তরমুজ চাষ করার মাধ্যমে পুরো বছর জুড়ে সারাদেশে তরমুজের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি পতিত পাহাড়গুলোকেও আবাদের আওতায় নিয়ে আসার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, সাধারণ তরমুজ চাষের জন্য ভূমিতে যে পরিমাণ অম্ল বা ক্ষার থাকা প্রয়োজন পাহাড়ি এলাকার মাটিতে সেই পরিমাণ উপাদান থাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামে তরমুজ চাষ সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।