কাঁচা চা পাতার গুণগত মান রক্ষা এবং ক্ষুদ্রায়তন চা চাষীদের কাঁচা চা পাতা বাজারজাতকরণ সহজতর করতে বান্দরবান সদর উপজেলার শ্যারণ পাড়ায় একটি ‘গ্রীন লিফ কালেকশন সেন্টার’ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।
শান্তিচুক্তি পরবর্তী স্থানীয় জনগণের সুষম উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশন এ সেন্টার স্থাপনের তহবিল যোগান দিয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার এবং ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোঃ সাইফুল আবেদীন মঙ্গলবার ১৬ নভেম্বর সকালে ‘গ্রীন লিফ কালেকশন সেন্টার’ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি কালেকশন সেন্টার চত্ত্বরে স্থানীয় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী চা চাষীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
উপস্থিত স্থানীয় চা চাষীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মানুষের জীবনে শান্তি আনতে হলে সুষম উন্নয়ন এবং তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি অত্যাবশ্যক।
জিওসি বলেন, বাংলাদেশ চা বোর্ড পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী জনগণের জন্য স্বল্পপরিমাণ জমিতে ক্ষুদ্রায়তন চা চাষ কর্মসূচির মাধ্যমে বিকল্প আয় এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগকে আরো সম্প্রসারণের জন্য আগ্রহী চাষীদের বিশেষ প্রণোদনা দিতে আগ্রহী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জিয়াউল হক এবং চা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা এবং চা বোর্ড কর্মকর্তারা বান্দরবান থানচি সড়কের শ্যারণ পাড়ায় পাহাড়ের ঢালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত একটি চা বাগান পরিদর্শন করেন।
১৯৯৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্রায়তন চা চাষ নিয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালিত হয়। সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ২০০৫ সালে বান্দরবানের সদর উপজেলা এবং রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় উন্নত জাতের চা চাষ শুরু হয়।
রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় প্রথম দিকে কিছু কিছু জমিতে ক্ষুদ্রায়তন চা চাষ শুরু হলেও সেখানে খুব একটা আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি।
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ২ শতাধিক স্থানীয় জুমিয়া চাষীর মাধ্যমে প্রায় ৫শত একর পাহাড়ি জমিকে চা চাষ কর্মসূচির আওতায়ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এখানে উৎপাদিত চা প্রক্রিয়াজাত করণের জন্য বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালকে বাংলাদেশ চা বোর্ড উপকেন্দ্রে একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করা হয়েছে।