বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিভিন্ন ধারায় বান্দরবান সদর থানায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী জানান, বুধবার (২১ আগষ্ট) দুপুরে থানায় দায়ের হওয়া মামলা দুটি বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) দুপুরে বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে গত ১৬ জুলাই বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা মো. শামীম হোসেন (৪৫)। অপর মামলাটি দায়ের করা হয়, ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে বাধা ও হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই মামলা বাদী বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম।
পুলিশ সূত্র জানায়, শহীদুল ইসলামের দায়ের করা মামলায় মোট ২৬ জনের নাম এবং ১০০/১৫০ অজ্ঞাতনামা আসামীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আসামীরা হচ্ছেন: ১. ক্যশৈহ্লা মার্মা (৫০-সভাপতি, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ), ২. লক্ষীপদ দাশ (৫০-সাধারণ সম্পাদক, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ), ৩. অমল কান্তি দাশ (৫০-সভাপতি বান্দরবান পৌর আওয়ামীলীগ), ৪. মোজাম্মেল হক বাহাদুর (৪৮-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগ), ৫. সৌরভ দাশ শেখর (৪৮-আওয়ামীলীগ নেতা), ৬. চৌধুরী প্রকাশ বড়ুয়া (৪৫-সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগ), ৭. মং ওয়াই চিং (৪২-স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি, বান্দরবান), ৮. রাজু বড়ুয়া (৩৮-সদস্য জেলা আওয়ামীলীগ), ৯. ফারুক আহমেদ ফাহিম (৩৫-সাধারণ সম্পাদক, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ), ১০. উমর ফারুক (৪০-ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ), ১১. হাকিম (২৩-ওয়ার্ড যুবলীগ), ১২. আবু তৈয়ব চৌধুরী (৩০), ১৩. মোহাম্মদ আরিফ (২৫), ১৪. মো. তারেকুল ইসলাম (২৫), ১৫. সাদেক হোসেন চৌধুরী (৪৫-সাবেক সভাপতি, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ), ১৬. বিমল কান্তি দাশ (৪৮-ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা), ১৭. কেলু মং (৪৫-সভাপতি জেলা যুবলীগ), ১৮. আকাশ চৌধুরী (২৬-যুবলীগ নেতা), ১৯. অজিত কান্তি দাশ (৪৫-সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগ), ২০. অং ছাইং উ পুলু মার্মা (২৮-সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগ), ২১. সঞ্জয় দাশ (৪০-সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগ), ২২. আবু খায়ের আবু (৫০-ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা), ২৩. মো. আবুল কালাম (৫০-ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা), ২৪. আহম্মদ হোসেন আসিফ আকবর (৩০-সাধারণ সম্পাদক, সদর উপজেলা যুবলীগ), ২৫. টিপু দাশ (২৫-আহ্বায়ক, বান্দরবান কলেজ ছাত্রলীগ) এবং ২৬. আবুল খায়ের (৪৫)।
অপরদিকে মো. শামীম হোসেনের দায়ের করা মামলায় আসামী সংখ্যা ২৮। এরা হচ্ছেন: ১. লক্ষীপদ দাশ (৫০-সাধারণ সম্পাদক, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ) ২. ক্যশৈহ্লা মার্মা (৫০-সভাপতি, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ), ৩. মোজাম্মেল হক বাহাদুর (৪৮-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগ), ৪. অমল কান্তি দাশ (৫০-সভাপতি বান্দরবান পৌর আওয়ামীলীগ), ৫. সৌরভ দাশ শেখর (৪৮-আওয়ামীলীগ নেতা), ৬. চৌধুরী প্রকাশ বড়ুয়া (৪৫-সাবেক সভাপতি, জেলা যুবলীগ), ৭. রাজু বড়ুয়া (৩৮-সদস্য জেলা আওয়ামীলীগ), ৮. ফারুক আহমেদ ফাহিম (৩৫-সাধারণ সম্পাদক, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ), ৯. উমর ফারুক (৪০-ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ), ১০. হাকিম (২৩-ওয়ার্ড যুবলীগ), ১১. আবু তৈয়ব চৌধুরী (৩০), ১২. মোহাম্মদ আরিফ (২৫), ১৩. মো. তারেকুল ইসলাম (২৫), ১৪. কাঞ্চন তংঞ্চঙ্গ্যা (৫০-জেলা আওয়ামলীগ), ১৫. রাশেদ চৌধুরী (৪০-সাবেক সভাপতি, বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগ), ১৬. অজিত কান্তি দাশ (৪৫-সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগ), ১৭. মোঃ মহিউদ্দিন (৪৫-সদস্য জেলা আওয়ামীলীগ), ১৮. আকাশ চৌধুরী (২৬-যুবলীগ নেতা), ১৯. সাদ্দাম হোসেন (২২-সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগ), ২০. উমর ফারুক (৩৫-সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগ), ২১. রফিকুল ইসলাম (৪৫-সভাপতি শ্রমিকলীগ), ২২. আলমগীর ড্রাইভার (৩০-ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা), ২৩. নুর মোহাম্মদ কালু (৪৫), ২৪. মোহাম্মদ নুরু (৪৫), ২৫. মোঃ হানিফ (২৮), ২৬. আক্কাস আলী (৪০), ২৭. আবু তাহের ওরফে মুরগী তাহের (৪৫-ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ) এবং ২৮. মোঃ ইসমাইল (২৫)। এই মামলার আর্জিতে ১০০/১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, এতদিন মামলা দায়ের করা না হলেও এখন থেকে পর্যায়ক্রমে আরো বেশ ক’টি মামলা হতে পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বান্দরবান সদর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।