বান্দরবানের থানচি উপজেলায় একজন খেয়াং নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার ৫ মে থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের মংখ্যং পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তারা এ ঘটনাকে ধর্ষণের পর নৃশংস হত্যাকান্ড বলে দাবি করে মঙ্গলবার ৬ মে দুপুরে বান্দরবান জেলা সদরে সভা সমাবেশ করছে।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বলছে, মৃত্যুর সুরতহাল করার সময় চিংম্রা খেয়াং (২৯) দেহের বিভিন্ন অংশে নৃশংসতার চিহ্ন পাওয়া গেলেও ধর্ষণের কোন আলামত মিলেনি।
মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, এটি দুর্ঘটনা না হত্যাকান্ড ময়নাতদন্তের পর সে বিষয়ে জানা যাবে। এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার সঠিক কারণ অনুসন্ধানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
এই সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বান্দরবান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, চিংম্রা খেয়াং এর মরদেহ উদ্ধারের পর নারী পুলিশ কনস্টেবল এবং ভিকটিমের শাশুড়ির উপস্থিতিতে থানচি থানার পুলিশ ভিকটিমের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। সুরতহাল প্রস্তুতকালে ভিকটিমের মাথা ও মুখমন্ডলের ক্ষত ও জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়।
ভিকটিমের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী জুম ক্ষেতে কাজ করতে যান গৃহবধু চিংম্রা খেয়াং। দুপুর পর্যন্ত তিনি বাড়ি ফিরে না আসায় স্বজনরা খুঁজতে গিয়ে থোয়াইউখই খিয়াং এর জুম ক্ষেতে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি ও পুলিশ সুপার বলেছেন, ময়নাতদন্তে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে থানচি থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন মজুমদার জানিয়েছেন, এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের স্বামী সুমন খেয়াং বাদী হয়ে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। পুলিশ এটিকে একটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে।