বান্দরবানের আলীকদমের এক দুর্গম পাহাড়ের জুম ঘরে গাদা বন্দুকের গুলিতে ত্বহা বিন আমীন (২৪) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার ২১ জুলাই বিকেলে উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডভুক্ত চাইল্ল্যাতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে নিহতের মা সালমা বেগম বাদী হয়ে ত্বহার সফরসঙ্গী মীর মাহদী হাসান নাবিলের নাম উল্লেখ করে মঙ্গলবার ২২ জুলাই আলীকদম থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নাবিল ছাড়া অন্য বন্ধুদের ছেড়ে দেয়।
বান্দরবান জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করীম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার রাতে নিহত পর্যটকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আবদুল করীম জানান, মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ওই মরদেহ বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবং আসামী মীর মাহদী হাসান নাবিলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো জানান, শনিবার ১৯ জুলাই ঢাকা থেকে ৫ বন্ধু আলীকদমে বেড়াতে আসে। তারা পর্যটক তথ্য কেন্দ্রে নাম তালিকাভুক্ত না করে ম্রো জনজাতি অধ্যুষিত আলীকদম উপজেলার দুর্গম দরি পাড়ায় রাত কাটায়। পরদিন তারা তরনী পাড়ায় চলে যায়। এবং সেখানে একটি জুম ঘরে রাত কাটায়। পরদিন সকালে তারা ঘরের চালে একটি গাদাবন্দুক দেখতে পেয়ে তা বের করে নাড়াচড়া করে। এসময় নাবিলের হাতে থাকা বন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে ত্বহা বিন আমীনের বুকে বিদ্ধ হয় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
ক্রাতপুং ম্রো জানান, প্রায় বাড়িতে পশু-পাখি শিকার করার জন্য এ ধরনের গাদাবন্দুক রাখা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দুকটি জুমঘরে রেখে ম্রো পরিবারটি জুম ক্ষেতে কাজ করার জন্য দূরে চলে যায়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, নিহত ত্বহা বিন আমীন ঢাকা জেলার ডেমরা থানার শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা। শনিবার সাইফুল, মেরাজ, নাবিল ও মিনহাজকে সাথে নিয়ে ত্বহা আলীকদম আসে।
অনেকেই আশংকা করছেন, পরিকল্পনামাফিক হত্যার জন্য আলীকদমসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা ব্যবহৃত হচ্ছে কি না- খতিয়ে দেখা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পুলিশও এমন একটি ধারণা মাথায় রেখে তদন্ত কাজে নেমেছে।
এর আগেও আলীকদমে বেড়াতে এসে পানিতে ভেসে গিয়ে একাধিক পর্যটকের মৃত্যু ঘটে।
