বান্দরবানবৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বান্দরবানে ওয়াগ্যোই পোয়ে: উৎসব

প্রতিবেদক
স্টাফ রিপোর্টার
অক্টোবর ১৮, ২০২৪ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বান্দরবানে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা জনজাতির তিন দিনব্যাপী ‘ওয়াগ্যোই পোয়ে:’ উৎসব।

প্রবারণা পূর্ণিমাকে উপলক্ষ্য করে জেলার বৌদ্ধ বিহারগুলোতে এই ধর্মীয় উৎসবের আয়োজন করা হয়।

ওয়াগ্যোই পোয়ে: উৎসবের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ রথ টানা এবং ফানুস উড়ানো।

উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি অং চ মং জানিয়েছেন, তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন সকাল থেকে নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার বিকেলে বান্দরবান জেলা সদরের রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে স্থাপিত আসাংম্রাই মুর্তিকে বন্দনা করার পর অরহৎ উপগুপ্ত বুদ্ধমুর্তিসহ রথ টেনে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে উজানীপাড়া মহা বৌদ্ধ বিহারে। সেখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে রথ নিয়ে আসা হবে পুরনো বোমাং রাজবাড়ি মাঠে।

দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় বর্ণিল সাজে সজ্জিত রথকে জনসাধারণের পূজা ও দানীয় বস্তু উৎসর্গের জন্য শহর প্রদক্ষিণ করানো হবে। শুক্রবার রাতে শঙ্খ নদীর উজানি পাড়া ঘাটে উপগুপ্ত বুদ্ধ বা জলের দেবতার উদ্দেশ্যে ভাসিয়ে দেয়া হবে।

এদিকে রথ টানার দিন থেকেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রতিদিন আকাশে উড়িয়ে দিবে হাজার হাজার রঙিন ফানুস।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে, সংসার ত্যাগ করে দীর্ঘ ধ্যান শেষে বুদ্ধত্ব লাভ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হতে মহামতি গৌতম তরবারি দিয়ে তার মস্তকের চুল কর্তন করে আকাশের দিকে ছুঁড়ে দেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, প্রকৃত অর্থে বুদ্ধত্ব লাভ ঘটলে চুলগুলো আকাশে ভাসতে থাকবে। না হলে সেগুলো ভূমিতে নিপতিত হবে।

কিন্তু সেদিন রাজকুমার গৌতমের ছুঁড়ে দেয়া চুল ভাসতে ভাসতে আকাশে স্থাপিত চুলামণির মন্দিরে গিয়ে ঠাঁই পায়।

মহামতি বুদ্ধের বুদ্ধত্ব লাভের ঘটনার স্মরণে বৌদ্ধরা আকাশে ফানুস ভাসায়।

বৌদ্ধ ধর্ম বিশারদরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রবারণা উৎসব উদযাপন করে। মারমা ভাষায় এটি ‘ওয়াগ্যোই পোয়ে:’ হিসেবেই পরিচিত।

এদিকে ওয়াগ্যোই পোয়ে: উপলক্ষে বান্দরবানের বোমাং সার্কেল চিফ রাজা উ চ প্রু বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান শহরের উজানি পাড়া মহা বৌদ্ধ বিহারে আসেন এবং শীল গ্রহণ ও ধর্মদেশনা গ্রহণ করেন।

জানা গেছে, শনিবার উপষদগ্রহণকারীরা বিহার থেকে বেরিয়ে সংসার জীবনে ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে এ বছরের মত এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।